০৭:০৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আজ জেলহত্যা দিবস,জাতির ইতিহাসে এক কলংক জনক অধ্যায়।।

  • Md Rasel Mia
  • সময়ঃ ০৩:২৬:১০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩ নভেম্বর ২০২৩
  • ১৪৭ সময়

স্টাফ রিপোর্ট:

জেলহত্যা দিবস আজ। দেশের ইতিহাসে এটি আরেকটি কলঙ্কজনক অধ্যায়। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের পর ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি চার জাতীয় নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী এবং এ এইচ এম কামারুজ্জামানকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
ঘৃণিত বিশ্বাসঘাতক স্বঘোষিত রাষ্ট্রপতি খন্দকার মোশতাক আহমদ এবং বঙ্গবন্ধুর দুই খুনি কর্নেল (বহিষ্কৃত) সৈয়দ ফারুক রহমান ও লে. কর্নেল (বহিষ্কৃত) খন্দকার আব্দুর রশীদ জেলখানায় জাতীয় চার নেতাকে হত্যার এ পরিকল্পনা করে। এ কাজের জন্য তারা একটি ঘাতক দলও গঠন করে। এ দলের প্রধান ছিল রিসালদার মুসলেহ উদ্দিন। সে ছিল ফারুকের সবচেয়ে আস্থাভাজন। ১৫ আগস্ট শেখ মনির বাসভবনে যে ঘাতক দলটি হত্যাযজ্ঞ চালায়, সেই দলটির নেতৃত্ব দিয়েছিল এই মুসলেহ উদ্দিন।

বঙ্গবন্ধুর আনুষ্ঠানিক স্বাধীনতা ঘোষণার পরপরই পাকিস্তানের সামরিক জান্তা ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে জাতির পিতাকে তার ঐতিহাসিক ধানমন্ডির বাসভবন থেকে গ্রেপ্তার করে। পরে দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সৈয়দ নজরুল ইসলাম বাংলাদেশ সরকারের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধকালীন মুজিবনগর সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাজউদ্দীন আহমদ একটি স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। বঙ্গবন্ধুর অন্য ঘনিষ্ঠ সহযোগী এ এইচ এম কামারুজ্জামান ও মনসুর আলী মুজিবনগর সরকারের মন্ত্রী হিসেবে আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধ পরিচালনার ক্ষেত্রে নীতি ও কৌশল নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতা হত্যা তদন্তে একটি কমিশন গঠন করা হয়েছিল লন্ডনে। এসব হত্যার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইন ও বিচারের প্রক্রিয়াকে যেসব বিষয় বাধাগ্রস্ত করেছে সেগুলো তদন্ত করার জন্য ১৯৮০ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর এই তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়। তবে জিয়াউর রহমানের অসহযোগিতার কারণে এবং কমিশনের সদস্যকে ভিসা প্রদান না করায় এ উদ্যোগটি সফল হতে পারেনি।

জাতির পিতার দুই কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা, মনসুর আলীর পুত্র মোহাম্মদ সেলিম এবং সৈয়দ নজরুল ইসলামের পুত্র সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের আবেদনক্রমে স্যার থমাস উইলিয়ামস, কিউ সি এমপির নেতৃত্বে এই কমিশন গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী চার জাতীয় নেতাকে যথাযথ শ্রদ্ধা প্রদর্শনের মাধ্যমে দেশের ইতিহাসের অন্যতম বর্বরোচিত এই দিনটি পালন করা হবে। জাতীয় চার নেতার পরিবার, আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে সারা দেশে পালিত হবে শোকাবহ এ দিনটি।

আওয়ামী লীগের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, সূর্য উদয়ক্ষণে বঙ্গবন্ধু ভবন ও দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ দেশের সর্বত্র দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ এবং কালো পতাকা উত্তোলন। সকাল সাড়ে ৭টায় ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ। সকাল ৮টায় বনানী কবরস্থানে জাতীয় চার নেতার কবরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, মিলাদ ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে। একই সময় রাজশাহীতে শহীদ কামারুজ্জামানের কবরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, মিলাদ ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে।

দিবসটি উপলক্ষে বিকেল ৩টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আলোচনা সভা হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

About Author Information

Md Rasel Mia

জনপ্রিয় নিউজ

ময়মনসিংহের গৌরীপুরে ইউএনও ২২ কি.মি সড়কে রোপন করলেন তালবীজ

আজ জেলহত্যা দিবস,জাতির ইতিহাসে এক কলংক জনক অধ্যায়।।

সময়ঃ ০৩:২৬:১০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩ নভেম্বর ২০২৩

স্টাফ রিপোর্ট:

জেলহত্যা দিবস আজ। দেশের ইতিহাসে এটি আরেকটি কলঙ্কজনক অধ্যায়। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের পর ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি চার জাতীয় নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী এবং এ এইচ এম কামারুজ্জামানকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
ঘৃণিত বিশ্বাসঘাতক স্বঘোষিত রাষ্ট্রপতি খন্দকার মোশতাক আহমদ এবং বঙ্গবন্ধুর দুই খুনি কর্নেল (বহিষ্কৃত) সৈয়দ ফারুক রহমান ও লে. কর্নেল (বহিষ্কৃত) খন্দকার আব্দুর রশীদ জেলখানায় জাতীয় চার নেতাকে হত্যার এ পরিকল্পনা করে। এ কাজের জন্য তারা একটি ঘাতক দলও গঠন করে। এ দলের প্রধান ছিল রিসালদার মুসলেহ উদ্দিন। সে ছিল ফারুকের সবচেয়ে আস্থাভাজন। ১৫ আগস্ট শেখ মনির বাসভবনে যে ঘাতক দলটি হত্যাযজ্ঞ চালায়, সেই দলটির নেতৃত্ব দিয়েছিল এই মুসলেহ উদ্দিন।

বঙ্গবন্ধুর আনুষ্ঠানিক স্বাধীনতা ঘোষণার পরপরই পাকিস্তানের সামরিক জান্তা ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে জাতির পিতাকে তার ঐতিহাসিক ধানমন্ডির বাসভবন থেকে গ্রেপ্তার করে। পরে দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সৈয়দ নজরুল ইসলাম বাংলাদেশ সরকারের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধকালীন মুজিবনগর সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাজউদ্দীন আহমদ একটি স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। বঙ্গবন্ধুর অন্য ঘনিষ্ঠ সহযোগী এ এইচ এম কামারুজ্জামান ও মনসুর আলী মুজিবনগর সরকারের মন্ত্রী হিসেবে আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধ পরিচালনার ক্ষেত্রে নীতি ও কৌশল নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতা হত্যা তদন্তে একটি কমিশন গঠন করা হয়েছিল লন্ডনে। এসব হত্যার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইন ও বিচারের প্রক্রিয়াকে যেসব বিষয় বাধাগ্রস্ত করেছে সেগুলো তদন্ত করার জন্য ১৯৮০ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর এই তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়। তবে জিয়াউর রহমানের অসহযোগিতার কারণে এবং কমিশনের সদস্যকে ভিসা প্রদান না করায় এ উদ্যোগটি সফল হতে পারেনি।

জাতির পিতার দুই কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা, মনসুর আলীর পুত্র মোহাম্মদ সেলিম এবং সৈয়দ নজরুল ইসলামের পুত্র সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের আবেদনক্রমে স্যার থমাস উইলিয়ামস, কিউ সি এমপির নেতৃত্বে এই কমিশন গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী চার জাতীয় নেতাকে যথাযথ শ্রদ্ধা প্রদর্শনের মাধ্যমে দেশের ইতিহাসের অন্যতম বর্বরোচিত এই দিনটি পালন করা হবে। জাতীয় চার নেতার পরিবার, আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে সারা দেশে পালিত হবে শোকাবহ এ দিনটি।

আওয়ামী লীগের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, সূর্য উদয়ক্ষণে বঙ্গবন্ধু ভবন ও দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ দেশের সর্বত্র দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ এবং কালো পতাকা উত্তোলন। সকাল সাড়ে ৭টায় ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ। সকাল ৮টায় বনানী কবরস্থানে জাতীয় চার নেতার কবরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, মিলাদ ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে। একই সময় রাজশাহীতে শহীদ কামারুজ্জামানের কবরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, মিলাদ ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে।

দিবসটি উপলক্ষে বিকেল ৩টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আলোচনা সভা হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।