স্টাফ রিপোর্টার :ঈদযাত্রা শুরু হয়ে গেছে। প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ উদযাপনের আর বাকি মাত্র ২ দিন। আজ কালের মধ্যেই যে যার বাড়িতে ছুটবেন নিজ নিজ নাড়ির টানে।
ঈদযাত্রায় কেউ ব্যবহার করবেন গাড়ি, কেউ বাস কেউ ট্রেন কেউ বা আবার অন্য কোনো বাহন। কিন্তু অনেকেরই গাড়িতে চড়লেই মাথা ঘুরে, বমি পায়। কেউ আবার যাত্রাপথের পুরোটাই বমি করতে থাকেন। পরে গন্তব্যস্থলে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন।
হজ পালনের নিয়ম, কোন দিন কী করতে হবে
চিকিৎসকরা বলছেন, শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ বিভিন্ন ভাবে গতি অনুভব করে। সেই সব অঙ্গ থেকে সঙ্কেত সরাসরি পৌঁছে যায় মস্তিষ্কে। বিভিন্ন দিক থেকে আসা আলাদা, আলাদা সঙ্কেত গ্রহণ করে মস্তিষ্কের স্নায়ুও ধাঁধায় পড়ে যায়। কী করতে হবে বুঝে উঠতে পারে না। তখনই মাথা ঘোরা, গা গোলানো, বমি বমি ভাব দেখা দেয়।
যাত্রা পথে বমি থেকে মুক্তির উপায়
যাত্রাপথে বমি থেকে মুক্তি পাওয়ার কোনো নির্দিষ্ট উপায় নেই। অনেক দিন ধরে সমস্যা চলমান থাকলে, সে ব্যাপারে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলাই ভালো। তবে কিছু নিয়ম মেনে চললে হুটহাট বমি পাওয়া থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
(১) বাস বা গাড়িতে উঠে সব সময়ে সামনের সিটে বসার চেষ্টা করুন। পেছনের দিকে না বসাই ভালো। কারণ ঝাঁকুনি লেগে অবস্থা আরো খারাপ হতে পারে।
(২) চলন্ত বাসে উঠে বই পড়বেন না বা মোবাইলে কোনো লেখা পড়বেন না।
(৩) জানালার পাশে বসার চেষ্টা করুন। জানালা খোলা রাখুন, বাইরের বাতাস ভেতরে আসতে দিন। জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে থাকুন। গাড়ির ভেতরের দিকে খুব বেশি সময় তাকিয়ে থাকবেন না।
(৪) যেদিকে গাড়ি চলছে সেদিক পেছন দিয়ে বসবেন না, এতে বমি ভাব বেশি হয়।
(৫) অন্য যাত্রীর বমি করা দেখলে যদি বমি পায় তাহলে সেদিকে মনোযোগ দেবেন না।
(৬) গাড়িতে উঠলে বমি হবে এমন চিন্তা করবেন না। নিজেকে শান্ত রাখুন, লম্বা লম্বা শ্বাস নিতে পারেন। বমির কথা ভুলতে গান শুনতে পারেন।
(৭)শরীরে পানির অভাব ঘটলে বমি হওয়ার আশঙ্কা বেশি। তাই বলে গাড়িতে উঠে বমি পেলে ভুল করেও পানি খেয়ে নেবেন না। এতে সমস্যা বাড়বে বই কমবে না। বমির সমস্যা থাকলে যাত্রাপথে মদ্যপান না করাই ভাল।
(৮)গাড়িতে উঠলে বমি পাওয়ার পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকলে যাত্রার আগে ভরপেট না খাওয়াই ভাল। হালকা খাবার খেয়ে গাড়ি কিংবা বাসে উঠুন। তবে একেবারে খালি পেটে নয়। এতে পেটে অ্যাসিডিটি তৈরি হবে না। অ্যাসিডিটি বমির অন্যতম কারণ।
(৯) আদা ও দারুচিনি খাবার হজমে সাহায্য করে। বমি পেলে আদা কিংবা দারুচিনি চিবোতে পারেন। এতে সাময়িক বমি বমি ভাব দূর করা সম্ভব।
(১০) গাড়িতে উঠলেই বমি পাওয়ার ধাত থাকলে সঙ্গে রাখতে পারেন এলাচের বীজ। সে সময়ে কয়েকটি বীজ মুখে পুরলে বমির ভাব কেটে যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে চুয়িংগামেও কাজ হতে পারে। এ ছাড়া এক কাপ জলে আধ চামচ দারচিনির গুঁড়ো মিশিয়ে ফুটিয়ে নিন। যাত্রার মাঝে এই পানীয়ে চুমুক দিলেও বমির সমস্যা কমতে পারে।
(১১) অনেক সময় এসিতে বদ্ধ পরিবেশে থাকলেও বমি পেতে পারে। তাই লং ড্রাইভে এসি না চালিয়ে বাইরের খোলা হাওয়া উপভোগ করুন। গাড়ির জানলার কাচ খোলা রাখুন।
(১২) টকজাতীয় ফল খেলেও বমিভাব দূর হয়। এ ছাড়া লেবু, লেবুপাতার ঘ্রাণেও বমি ভাব দূর হয়।
(১৩)গাড়িতে উঠে শরীরে অস্বস্তি হয়? সমস্যা দূর করতে গাড়িতে উঠেই হালকা গান শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পড়ুন। তা হলে আর সমস্যা হবে না। ঘুম না এলে কিছু ক্ষণ শ্বাস ধরে রাখলে বমি ভাব কমে যেতে পারে। বমি পেলে ধীরে ধীরে গভীর শ্বাস নিন। চোখ বন্ধ করে রাখুন। কিছু ক্ষণ এই ভাবে থাকলে দেখবেন বমি বমি ভাবটা কেটে গিয়েছে।
(১৪) এত কিছুর পরও যদি বমি পায়, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। পরামর্শ অনুযায়ী বমির ওষুধ খেয়ে চড়তে পারেন গাড়িতে।