আজকের ঢাকা অনলাইন ডেস্ক: বদল বলে বদল! রাজনৈতিক, কূটনৈতিক এমনকী ধর্মীয় পরিবর্তন বললেও অত্যুক্তি হবে না বোধহয়। হিন্দুত্ববাদী ঋষি সুনাককে হারিয়ে ব্রিটেনের মসনদে বসছেন মধ্যপন্থী লেবার পার্টির নেতা কিয়ের স্টার্মার। ১০, ডাউনিং স্ট্রিটের নতুন বাসিন্দা তিনি। আর ব্রিটিশ ফার্স্ট লেডি হতে চলেছেন ভিক্টোরিয়া স্টার্মার। আর এই ভিক্টোরিয়ার জীবনযাত্রা এখন চর্চার কেন্দ্রে। তিনি আগাগোড়া ধর্মপ্রাণা ইহুদি। ছোট থেকে বাবা-মায়ের প্রভাবে ভিক্টোরিয়া বাড়িতে বরাবর ইহুদি সংস্কৃতির সঙ্গে ওঠাবসা করেছেন। স্টার্মারকে বিয়ের পরও তিনি নিজের বাড়িতে সেই সংস্কৃতি বজায় রেখেছেন। দুই সন্তানকেও মানুষ করেছেন সেভাবেই। আর তাঁর সম্পর্কে এসব তথ্য জানার পর সকলে বলছেন, এবার থেকে দীপাবলি বা ক্রিসমাসের পাশাপাশি ১০,ডাউনিং স্ট্রিট অর্থাৎ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে ধুমধাম করে পালিত হবে ইহুদিদের বড় উৎসব ‘শাবাত’।
যুক্তরাজ্যের নির্বাচনে জয় পেলেন লেবার পার্টি, পরাজয় স্বীকার স্টারমারকে অভিনন্দন জানালেন ঋষি সুনাক
ভিক্টোরিয়া স্টার্মারের পূর্ব নাম ভিক্টোরিয়া আলেকজান্ডার। জন্ম ১৯৬৩ সালে, উত্তর লন্ডনে। বাবা পোলিশ-ইহুদি। মা ছিলেন ডাক্তার । মূলত ইহুদি সম্প্রদায়ের মানুষজনের চিকিৎসা করতেন তিনি। বিয়ের পর ধর্মান্তরিত হন। মা-বাবার থেকেই ইহুদি সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধাশীলতা অর্জন করেছেন ভিক্টোরিয়া। তিনি নিজে পেশায় ছিলেন আইনজীবী। পরবর্তী সময়ে তিনি কমিউনিটি সার্ভিস অর্থাৎ জনসেবার কাজে যুক্ত হন। কিয়ের স্টার্মার নিজে নাস্তিক। তবে স্ত্রীর ধর্মাচরণ নিয়ে তাঁর কখনও কোনও আপত্তি ছিল না। বাড়িতে প্রতি সপ্তাহে ইহুদিদের বিখ্যাত রুটি চাল্লাহ আর সুরা কিদ্দুশ তৈরি হয়। স্টার্মার কোনও এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, তাঁর স্ত্রী চান, সন্তানরাও ইহুদি সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হোক। সেইমতো তাঁদের বড় করেছেন।
শুধুমাত্র লন্ডনেই নয়, ভিক্টোরিয়ার ইহুদি সংযোগ আরও বহু দূর পর্যন্ত বিস্তৃত। এমনিতে গোটা বিশ্বে ইহুদি সম্প্রদায়ের মানুষজন অত্যন্ত সীমিত। তাঁদের অস্তিত্ব তো বটেই, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য রক্ষায় ভিক্টোরিয়ার কাজ সুদূরপ্রসারী। লন্ডনের সেন্ট জনস উড, যা উদারপন্থী সিনাগগ বলে পরিচিত, সেখানকার সদস্য ভিক্টোরিয়া। এই সিনাগগ দীর্ঘদিন ধরে উদারপন্থী সংস্কারের কাজ করে আসছে। এহেন ভিক্টোরিয়ার হাত ধরে ১০, ডাউনিং স্ট্রিটে বেশ জমাটি ‘শাবাত’ উৎসব উদযাপন হবে বলে মনে করা হচ্ছে। অর্থাৎ এবার থেকে দীপাবলি, ক্রিসমাসের পাশাপাশি শাবাতেও আলো ঝলমলে হয়ে উঠবে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন।