০১:৫০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নভেম্বরের প্রথম সোমবারের পরের মঙ্গলবারই ভোট হয় কেন

  • Md Mizanur Rahman
  • সময়ঃ ০৯:৫৫:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর ২০২৪
  • ১৪ সময়

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: লাতিন আমেরিকায় সাধারণত রবিবার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ভারতের বিশাল ভৌগোলিক বিস্তৃতির কারণে ভোট প্রক্রিয়া চলে কয়েক সপ্তাহ ধরে। মধ্যপ্রাচ্যের অধিকাংশ দেশেই শনিবার  নির্বাচনের জন্য নির্ধারিত। কিন্তু বিশ্ব পরাশক্তি মার্কিন  যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি চার বছর পরপর নভেম্বরের প্রথম সোমবারের পরের মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।

সংস্কার শেষে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে নির্বাচন: তথ্য উপদেষ্টা

চলতি বছর ৫ নভেম্বর, ডেমোক্র্যাটিক ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস ও রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা কেন্দ্রীভূত হওয়া এই নির্বাচনে আমেরিকানরা আবারও ভোট দিচ্ছেন। নভেম্বর মাসের এই ভোটের দীর্ঘ ঐতিহ্য থাকা সত্ত্বেও কেন এই নির্দিষ্ট সময়টি বেছে নেওয়া হয়েছে, তা অনেকেই জানেন না।

১৮৪৫ সালে শুরু হওয়া এই প্রথার সূত্রপাত ১৯ শতকের মাঝামাঝি সময়ে। ওই সময় যুক্তরাষ্ট্রের সমাজ ছিল মূলত কৃষিনির্ভর। সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় বিভিন্ন বিষয় তখনকার সমাজের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল। যা এই ভোটের সময় বেছে নেওয়াকে প্রভাবিত করেছে।

ওই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের অধিকাংশ নাগরিকই ছিলেন কৃষক। যাদের জীবন আবর্তিত হতো ঋতুভিত্তিক কাজ, ধর্মীয় আচার ও সাপ্তাহিক বাজারের ওপর। হ্যাঁ, এই প্রথার মূল কারণ হিসেবে বলা যায় মার্কিন কৃষকদের জীবনধারা।

তখনকার দিনে কৃষকরা ঘোড়ার গাড়ি ব্যবহার করে ভোটকেন্দ্রে যেতেন। যা প্রায় একটি সম্পূর্ণ দিনের ভ্রমণ ছিল। রবিবার ছিল উপাসনার জন্য বরাদ্দ এবং বুধবার ছিল কৃষকদের বাজারের দিন। এই দুই দিনের মাঝের একটি দিন নির্বাচন আয়োজনের জন্য ছিল সর্বাধিক উপযুক্ত। মঙ্গলবার নির্বাচনের দিন নির্ধারণ করায় ভোটাররা সহজেই ভোট দিতে পারতেন, ধর্মীয় ও বাজারের ক্ষেত্রে কোনও বিঘ্ন ছাড়াই।

নভেম্বরের প্রথম সোমবারের পরবর্তী মঙ্গলবার নির্বাচন রাখার আরেকটি কারণ ছিল নভেম্বর মাসের প্রথম দিনটি। এটি অল সেন্টস ডে বা খ্রিষ্টানদের ধর্মীয় দিবস। যাতে এই দিবসে ভোট না পড়ে তাই মঙ্গলবার বেছে নেওয়া হয়।

যদিও আধুনিক জীবনে সেই ভ্রমণ বা বাজারের বাধ্যবাধকতা আর নেই। তবে ঐতিহ্যগতভাবে মঙ্গলবারে ভোটগ্রহণ এখনও বিদ্যমান।

নভেম্বরের প্রথম সোমবারের পরবর্তী মঙ্গলবার নির্বাচন আয়োজনের পেছনে সাংস্কৃতিক ও বাস্তবিক প্রভাবও ছিল। অনেক ব্যবসায়ী মাসের প্রথম দিন তাদের হিসাব-নিকাশ সম্পন্ন করতেন। তাই এই দিনের পরে নির্বাচন রাখার ফলে ব্যবসায়িক কাজে কোনও ব্যাঘাত ঘটতো না। এছাড়া, নভেম্বর মাসটি নির্বাচন উপযোগী হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছিল। কারণ এটি ছিল শীতের শুরুর সময়, যখন কৃষি কাজের মৌসুম শেষ হওয়ার পথে।

বর্তমানে মার্কিন সমাজে কৃষির প্রভাব আগের মতো নেই। অনেকেই প্রস্তাব করছেন নির্বাচন দিনটি সপ্তাহান্তে সরিয়ে নেওয়ার অথবা এটি জাতীয় ছুটির দিন হিসেবে ঘোষণা করা হোক, যাতে ভোটার উপস্থিতি বাড়ানো যায়। কারণ, অনেক আমেরিকানের জন্য সপ্তাহের মাঝের দিনে ভোট দিতে আসা কঠিন হয়ে পড়ে। যদিও এই প্রচেষ্টাগুলো সফল হয়নি। তবু আগাম ভোট ও মেইল-ইন ভোটের বিকল্প বৃদ্ধি পাওয়ায় নির্বাচন দিবসের গুরুত্ব কিছুটা হ্রাস পেয়েছে।

Tag :
About Author Information

Md Mizanur Rahman

জনপ্রিয় নিউজ

ময়মনসিংহের গৌরীপুরে ইউএনও ২২ কি.মি সড়কে রোপন করলেন তালবীজ

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নভেম্বরের প্রথম সোমবারের পরের মঙ্গলবারই ভোট হয় কেন

সময়ঃ ০৯:৫৫:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর ২০২৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: লাতিন আমেরিকায় সাধারণত রবিবার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ভারতের বিশাল ভৌগোলিক বিস্তৃতির কারণে ভোট প্রক্রিয়া চলে কয়েক সপ্তাহ ধরে। মধ্যপ্রাচ্যের অধিকাংশ দেশেই শনিবার  নির্বাচনের জন্য নির্ধারিত। কিন্তু বিশ্ব পরাশক্তি মার্কিন  যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি চার বছর পরপর নভেম্বরের প্রথম সোমবারের পরের মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।

সংস্কার শেষে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে নির্বাচন: তথ্য উপদেষ্টা

চলতি বছর ৫ নভেম্বর, ডেমোক্র্যাটিক ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস ও রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা কেন্দ্রীভূত হওয়া এই নির্বাচনে আমেরিকানরা আবারও ভোট দিচ্ছেন। নভেম্বর মাসের এই ভোটের দীর্ঘ ঐতিহ্য থাকা সত্ত্বেও কেন এই নির্দিষ্ট সময়টি বেছে নেওয়া হয়েছে, তা অনেকেই জানেন না।

১৮৪৫ সালে শুরু হওয়া এই প্রথার সূত্রপাত ১৯ শতকের মাঝামাঝি সময়ে। ওই সময় যুক্তরাষ্ট্রের সমাজ ছিল মূলত কৃষিনির্ভর। সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় বিভিন্ন বিষয় তখনকার সমাজের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল। যা এই ভোটের সময় বেছে নেওয়াকে প্রভাবিত করেছে।

ওই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের অধিকাংশ নাগরিকই ছিলেন কৃষক। যাদের জীবন আবর্তিত হতো ঋতুভিত্তিক কাজ, ধর্মীয় আচার ও সাপ্তাহিক বাজারের ওপর। হ্যাঁ, এই প্রথার মূল কারণ হিসেবে বলা যায় মার্কিন কৃষকদের জীবনধারা।

তখনকার দিনে কৃষকরা ঘোড়ার গাড়ি ব্যবহার করে ভোটকেন্দ্রে যেতেন। যা প্রায় একটি সম্পূর্ণ দিনের ভ্রমণ ছিল। রবিবার ছিল উপাসনার জন্য বরাদ্দ এবং বুধবার ছিল কৃষকদের বাজারের দিন। এই দুই দিনের মাঝের একটি দিন নির্বাচন আয়োজনের জন্য ছিল সর্বাধিক উপযুক্ত। মঙ্গলবার নির্বাচনের দিন নির্ধারণ করায় ভোটাররা সহজেই ভোট দিতে পারতেন, ধর্মীয় ও বাজারের ক্ষেত্রে কোনও বিঘ্ন ছাড়াই।

নভেম্বরের প্রথম সোমবারের পরবর্তী মঙ্গলবার নির্বাচন রাখার আরেকটি কারণ ছিল নভেম্বর মাসের প্রথম দিনটি। এটি অল সেন্টস ডে বা খ্রিষ্টানদের ধর্মীয় দিবস। যাতে এই দিবসে ভোট না পড়ে তাই মঙ্গলবার বেছে নেওয়া হয়।

যদিও আধুনিক জীবনে সেই ভ্রমণ বা বাজারের বাধ্যবাধকতা আর নেই। তবে ঐতিহ্যগতভাবে মঙ্গলবারে ভোটগ্রহণ এখনও বিদ্যমান।

নভেম্বরের প্রথম সোমবারের পরবর্তী মঙ্গলবার নির্বাচন আয়োজনের পেছনে সাংস্কৃতিক ও বাস্তবিক প্রভাবও ছিল। অনেক ব্যবসায়ী মাসের প্রথম দিন তাদের হিসাব-নিকাশ সম্পন্ন করতেন। তাই এই দিনের পরে নির্বাচন রাখার ফলে ব্যবসায়িক কাজে কোনও ব্যাঘাত ঘটতো না। এছাড়া, নভেম্বর মাসটি নির্বাচন উপযোগী হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছিল। কারণ এটি ছিল শীতের শুরুর সময়, যখন কৃষি কাজের মৌসুম শেষ হওয়ার পথে।

বর্তমানে মার্কিন সমাজে কৃষির প্রভাব আগের মতো নেই। অনেকেই প্রস্তাব করছেন নির্বাচন দিনটি সপ্তাহান্তে সরিয়ে নেওয়ার অথবা এটি জাতীয় ছুটির দিন হিসেবে ঘোষণা করা হোক, যাতে ভোটার উপস্থিতি বাড়ানো যায়। কারণ, অনেক আমেরিকানের জন্য সপ্তাহের মাঝের দিনে ভোট দিতে আসা কঠিন হয়ে পড়ে। যদিও এই প্রচেষ্টাগুলো সফল হয়নি। তবু আগাম ভোট ও মেইল-ইন ভোটের বিকল্প বৃদ্ধি পাওয়ায় নির্বাচন দিবসের গুরুত্ব কিছুটা হ্রাস পেয়েছে।