ইসরায়েলি বিমান হামলায় লেবাননের উত্তরাঞ্চলে অন্তত ২২ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর। আইতা গ্রামে সোমবারের হামলায় নিহতদের মধ্যে ১২ জন নারী ও দুই শিশু রয়েছে বলে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক মুখপাত্র জেরেমি লরেন্স জেনেভায় সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, “আমরা জেনেছি একটি চারতলা আবাসিক ভবনে এই হামলা হয়েছে। এই বিষয়গুলি বিবেচনায় আইএইচএল (আন্তর্জাতিক মানবিক আইন), যুদ্ধের আইন এবং এদের নীতিগত পার্থক্য নিয়ে আমাদের সত্যিকারের উদ্বেগ রয়েছে।”
হাইফা অঞ্চলে মঙ্গলবার বিমান সাইরেন চালু করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। লেবানন থেকে ইসরায়েলে নিক্ষিপ্ত বেশ কয়েকটি রকেটকে রুখে দিয়েছে ইসরায়েলি বিমান প্রতিরক্ষা বাহিনী। দক্ষিণ লেবাননে হিজবুল্লাহর লক্ষ্যবস্তুতে বিমান হামলায় কয়েক ডজন জঙ্গি নিহত হওয়ার কথাও মঙ্গলবার জানায় তারা।
সোমবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, হিজবুল্লাহকে কোন সহানুভূতি দেখানো হবে না, বৈরুতসহ লেবাননের প্রতিটি অংশেই হামলা অব্যাহত রাখবে ইসরায়েল।”
যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের তথ্যমতে, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে নেতানিয়াহু বলেছেন, ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের প্রতিশোধমূলক হামলা কেবল সামরিক লক্ষ্যবস্তুকে লক্ষ্য করে করা হবে, কোন তেল বা পারমাণবিক স্থাপনাগুলিকে লক্ষ্যবস্তু করা হবে না ।
কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ওয়াশিংটন পোস্ট ও ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল সোমবার এক প্রতিবেদনে জানায়, গত সপ্তাহে দুই নেতার মধ্যে ফোনালাপ চলাকালে নেতানিয়াহু এ প্রতিশ্রুতি দেন।
যদিও মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে নেতানিয়াহুর কার্যালয় বলেছে, “আমরা যুক্তরাষ্ট্রের মতামত শুনি, তবে জাতীয় স্বার্থের ওপর ভিত্তি করেই আমাদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব।”
ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরাল্লাহকে হত্যার প্রতিক্রিয়ায় এবং ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে ক্রমবর্ধমান সংঘাতের প্রেক্ষাপটে ইরান হামলা চালায়।
ইসরায়েল এই হামলার জবাব দেবে বলে জানায়। অন্যদিকে, ইসরায়েলের সমর্থনে তাদের একটি বিমান প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা এবং এটি পরিচালনার জন্য তাদের সেনা মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে দুই হাজার ৩০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় তিন-চতুর্থাংশ গত মাসে মারা গেছে।