০৫:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সকলে এগিয়ে আসতে হবে

স্বাস্থ্যসেবা না পাওয়ায় ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু হার বেশিঃব্যারিস্টার তাপস

  • Md Rasel Mia
  • সময়ঃ ১২:১৬:৫৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ মার্চ ২০২৪
  • ৬৬ সময়

স্টাফ রিপোর্টার :যথাযথ স্বাস্থ্যসেবা না পাওয়ায় পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের মৃত্যু হার বেশি বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ঢাদসিক) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।

আজ বুধবার (২০ মার্চ) দুপুরে ভূতের গলি সামাজিক অনুষ্ঠান কেন্দ্র নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শেষে সাথে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস এ মন্তব্য করেন।

মতবিনিময়কালে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত রোগী ও মৃত্যু হার নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন,
গতকালও আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীসহ এ বিষয়ে একটা সভা করেছি। যে বিষয়টা সবচেয়ে পীড়াদায়ক তা হলো যে, গত বছর মৃত্যুর হার খুবই বেড়ে গিয়েছিলো। সেই ক্ষেত্রে আমরা বলেছি, স্বাস্থ্যসেবাকে আরো নিশ্চিত করতে হবে। কারণ গতবছর কিছু বিষয় আমরা লক্ষ্য করেছি — অনেক রোগীদেরকে প্রাথমিক পর্যায়ে বলা হয়েছে যে, হাসপাতালে ভর্তি না হয়ে বাসায় গিয়ে চিকিৎসা করলেও চলবে। পরবর্তীতে দেখা যাচ্ছে সেই রোগীর পরিস্থিতি আরো বেশি খারাপ হয়েছে। ফলশ্রুতিতে পরে তিনি যখন ভর্তি হয়েছে তখন দেখা যায় তাকে সেভাবে স্বাস্থ্য সেবা দেওয়া যায় না। এতে করে মৃত্যুর হার বেড়ে যাচ্ছে। এ বিষয়গুলো আমরা গতকালের সভায় তুলে ধরেছি।

ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস এ সময় পৃথিবীর অনেক দেশের তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরে আরো বলেন, ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব শুধু বাংলাদেশেই নয়, সারাবিশ্বে বিশেষ করে, যে সকল দেশে মৌসুমী বৃষ্টি হয় তথা বর্ষা প্রবণ অঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে এডিস মশা বেশি হয়। সেসব দেশের তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা করে আমরা দেখেছি, তাদের তুলনায় আমাদের ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে আমাদের দেশে মৃত্যুর সংখ্যা অনেক বেশি। তাহলে বুঝা যাচ্ছে যে, আমাদের দেশে রোগীরা স্বাস্থ্যসেবাটা সঠিকভাবে পাচ্ছে না। ২০১৯ সালে ঢাকা শহরে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ১ লক্ষ ৫৫ হাজারের মতো হলেও মৃত্যু হয়েছিল ২০০ এর নিচে। গতবছর ঢাকা শহরে রোগীর সংখ্যা ছিলো ১ লক্ষ ১০ হাজার। কিন্তু মৃত্যু ১ হাজার ৭০০ এর বেশি। পরিসংখ্যান থেকে এটা স্পষ্ট যে, স্বাস্থ্যসেবাকে আমাদের আরো গুরুত্ব দিতে হবে। আমরা রোগীর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করব। সে বিষয়ে সিটি করপোরেশন পর্যাপ্ত কাজ করছে। আমাদের পরিধি অনেক বৃদ্ধি করেছি। আমাদের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সময় বৃদ্ধি করেছি। আমাদের কর্মীরা আসলে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে কিনা, কর্মপরিকল্পনা পরিপালন করছে কিনা ইত্যাদি বিষয় আমরা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে তদারকি করছি। সে ক্ষেত্রে আমরা মনে করি, আমাদের প্রয়াস বা কর্মপরিকল্পনা ঠিক আছে। কিন্তু আমাদেরকে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে। যাতে করে একটি মৃত্যুও না ঘটে। বিশেষ করে আমরা গতবার লক্ষ্য করেছি, ছোট্ট শিশুরা অনেক বেশি আক্রান্ত হয়েছে এবং অনেকেই মৃত্যুবরণ করেছে। এটা আসলে অত্যন্ত পীড়াদায়ক। আক্রান্ত ও মৃত্যু হার কমাতে আমাদেরকে যৌথভাবে আরো সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে ঢাদসিক মেয়র এ সময় ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে নাগরিক সচেতনতা বৃদ্ধিতে আরো বেশি কঠোরতা দেখানো হবে বলে জানান।

পরে ঢাদসিক মেয়র ১৬ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম বাবুলের সৌজন্যে ওয়ার্ডের আওতাধীন ২১টি মসজিদের ১৫০ জন ইমাম, মুয়াজ্জিন, খতিব ও খাদেমের মাঝে ২৫ কেজি চাল, ৩ কেজি পোলাও চাল, ৩ কেজি চিনি, ৫ লিটার সয়াবিন তেল, ২ কেজি মসুর ডাল, ২ কেজি ছোলা, ১ কেজি খেজুরসহ ২৪ ধরনের ইফতার সামগ্রী বিতরণ করেন। এছাড়াও ঢাদসিক মেয়র শ্যামপুর এলাকায় ৫৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. মাসুদের সৌজন্যে ওয়ার্ডের ২ হাজার ৫০০ বাসিন্দার মাঝে ৫ কেজি চাল, ১ কেজি চিনি, ১ লিটার তেল, ১ কেজি ডালসহ ৮ ধরনের খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন।

এ সময় অন্যান্যের মাঝে ঢাকা-৪ আসনের সংসদ সদস্য ড. আওলাদ হোসেন, করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, সচিব আকরামুজ্জামান, প্রধান প্রকৌশলী আশিকুর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী মোর্শেদ হোসেন কামাল, অঞ্চল-১ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, অঞ্চল-৫ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন সরকার, সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর নারগিস মাহতাব প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

 

Tag :
About Author Information

Md Rasel Mia

জনপ্রিয় নিউজ

জানুয়ারি থেকে স্কুল-কলেজের সব শিক্ষকের এমপিও ইএফটিতে

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সকলে এগিয়ে আসতে হবে

স্বাস্থ্যসেবা না পাওয়ায় ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু হার বেশিঃব্যারিস্টার তাপস

সময়ঃ ১২:১৬:৫৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ মার্চ ২০২৪

স্টাফ রিপোর্টার :যথাযথ স্বাস্থ্যসেবা না পাওয়ায় পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের মৃত্যু হার বেশি বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ঢাদসিক) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।

আজ বুধবার (২০ মার্চ) দুপুরে ভূতের গলি সামাজিক অনুষ্ঠান কেন্দ্র নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শেষে সাথে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস এ মন্তব্য করেন।

মতবিনিময়কালে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত রোগী ও মৃত্যু হার নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন,
গতকালও আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীসহ এ বিষয়ে একটা সভা করেছি। যে বিষয়টা সবচেয়ে পীড়াদায়ক তা হলো যে, গত বছর মৃত্যুর হার খুবই বেড়ে গিয়েছিলো। সেই ক্ষেত্রে আমরা বলেছি, স্বাস্থ্যসেবাকে আরো নিশ্চিত করতে হবে। কারণ গতবছর কিছু বিষয় আমরা লক্ষ্য করেছি — অনেক রোগীদেরকে প্রাথমিক পর্যায়ে বলা হয়েছে যে, হাসপাতালে ভর্তি না হয়ে বাসায় গিয়ে চিকিৎসা করলেও চলবে। পরবর্তীতে দেখা যাচ্ছে সেই রোগীর পরিস্থিতি আরো বেশি খারাপ হয়েছে। ফলশ্রুতিতে পরে তিনি যখন ভর্তি হয়েছে তখন দেখা যায় তাকে সেভাবে স্বাস্থ্য সেবা দেওয়া যায় না। এতে করে মৃত্যুর হার বেড়ে যাচ্ছে। এ বিষয়গুলো আমরা গতকালের সভায় তুলে ধরেছি।

ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস এ সময় পৃথিবীর অনেক দেশের তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরে আরো বলেন, ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব শুধু বাংলাদেশেই নয়, সারাবিশ্বে বিশেষ করে, যে সকল দেশে মৌসুমী বৃষ্টি হয় তথা বর্ষা প্রবণ অঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে এডিস মশা বেশি হয়। সেসব দেশের তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা করে আমরা দেখেছি, তাদের তুলনায় আমাদের ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে আমাদের দেশে মৃত্যুর সংখ্যা অনেক বেশি। তাহলে বুঝা যাচ্ছে যে, আমাদের দেশে রোগীরা স্বাস্থ্যসেবাটা সঠিকভাবে পাচ্ছে না। ২০১৯ সালে ঢাকা শহরে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ১ লক্ষ ৫৫ হাজারের মতো হলেও মৃত্যু হয়েছিল ২০০ এর নিচে। গতবছর ঢাকা শহরে রোগীর সংখ্যা ছিলো ১ লক্ষ ১০ হাজার। কিন্তু মৃত্যু ১ হাজার ৭০০ এর বেশি। পরিসংখ্যান থেকে এটা স্পষ্ট যে, স্বাস্থ্যসেবাকে আমাদের আরো গুরুত্ব দিতে হবে। আমরা রোগীর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করব। সে বিষয়ে সিটি করপোরেশন পর্যাপ্ত কাজ করছে। আমাদের পরিধি অনেক বৃদ্ধি করেছি। আমাদের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সময় বৃদ্ধি করেছি। আমাদের কর্মীরা আসলে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে কিনা, কর্মপরিকল্পনা পরিপালন করছে কিনা ইত্যাদি বিষয় আমরা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে তদারকি করছি। সে ক্ষেত্রে আমরা মনে করি, আমাদের প্রয়াস বা কর্মপরিকল্পনা ঠিক আছে। কিন্তু আমাদেরকে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে। যাতে করে একটি মৃত্যুও না ঘটে। বিশেষ করে আমরা গতবার লক্ষ্য করেছি, ছোট্ট শিশুরা অনেক বেশি আক্রান্ত হয়েছে এবং অনেকেই মৃত্যুবরণ করেছে। এটা আসলে অত্যন্ত পীড়াদায়ক। আক্রান্ত ও মৃত্যু হার কমাতে আমাদেরকে যৌথভাবে আরো সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে ঢাদসিক মেয়র এ সময় ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে নাগরিক সচেতনতা বৃদ্ধিতে আরো বেশি কঠোরতা দেখানো হবে বলে জানান।

পরে ঢাদসিক মেয়র ১৬ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম বাবুলের সৌজন্যে ওয়ার্ডের আওতাধীন ২১টি মসজিদের ১৫০ জন ইমাম, মুয়াজ্জিন, খতিব ও খাদেমের মাঝে ২৫ কেজি চাল, ৩ কেজি পোলাও চাল, ৩ কেজি চিনি, ৫ লিটার সয়াবিন তেল, ২ কেজি মসুর ডাল, ২ কেজি ছোলা, ১ কেজি খেজুরসহ ২৪ ধরনের ইফতার সামগ্রী বিতরণ করেন। এছাড়াও ঢাদসিক মেয়র শ্যামপুর এলাকায় ৫৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. মাসুদের সৌজন্যে ওয়ার্ডের ২ হাজার ৫০০ বাসিন্দার মাঝে ৫ কেজি চাল, ১ কেজি চিনি, ১ লিটার তেল, ১ কেজি ডালসহ ৮ ধরনের খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন।

এ সময় অন্যান্যের মাঝে ঢাকা-৪ আসনের সংসদ সদস্য ড. আওলাদ হোসেন, করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, সচিব আকরামুজ্জামান, প্রধান প্রকৌশলী আশিকুর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী মোর্শেদ হোসেন কামাল, অঞ্চল-১ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, অঞ্চল-৫ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন সরকার, সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর নারগিস মাহতাব প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।