১২:৪০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ৬ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ছাগলকাণ্ডের মতিউর ও স্ত্রী-পুত্রের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

  • Md Rasel Mia
  • সময়ঃ ১১:১২:০৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ জুন ২০২৪
  • ৫২ সময়

স্টাফ রিপোর্টার :১৫ লাখ টাকার ছাগলকাণ্ডে আলোচিত রাজস্ব বোর্ডের প্রভাবশালী কর্মকর্তা মতিউর রহমান, তার স্ত্রী লায়লা কানিজ এবং ছেলে আহম্মেদ তৌফিকুর রহমান অর্ণবের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।

বেনজীর-আজিজ আওয়ামী লীগের কেউ না: ওবায়দুল কাদের 

দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকের আবেদনের শুনানি করে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন আজ সোমবার এই নিষেধাজ্ঞা জারির আদেশ দেন।

অপর দিকে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন,আদালতের বিষয়টি জেনেছি। তবে গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত আদেশের কপি ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ হাতে পায়নি। এরপর তারা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছেন। আর দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া ছেলে ও পরিবার নিয়ে ধূম্রজাল ছড়িয়েছে। তার দুইজন স্ত্রী ও সন্তানের কথা শুনেছি। কোন সংসারের স্ত্রী ও সন্তান পালিয়েছে তার তথ্য নিশ্চিতে অনুসন্ধান তদন্ত চলছে।

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, ছাগলকাণ্ডের পর ছেলেকে অস্বীকার করে এনবিআর কর্মকর্তা মতিউর বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ে গা ঢাকা দিয়েছিলেন। সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হয়ে নিজেকে আড়াল করে রেখেছিলেন তিনি। মোবাইল ফোনে যোগাযোগও ছিল সীমিত। সেই সময়ে অস্বীকার করা ছেলেকে নিরাপদে মালয়েশিয়ায় পাঠিয়ে দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে একটি সূত্র।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিন্যান্স বিভাগে পড়াশোনা করা মতিউর রহমান অনেক কোম্পানির ছায়া পরিচালক। একাধিক ছোট কোম্পানি শেয়ারবাজারে আনার মাধ্যমে বাজার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে তিনি ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন। শেয়ারবাজার কারসাজিতে জড়িতদের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে বলে অনুসন্ধানে জানা গেছে।

আইন শৃংখলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের মতে,এনবিআর কর্মকর্তা মতিউর ছিল ম্যানেজ মাস্টার। বিএনপি ও জামাত জোট সরকার আমল থেকে শুরু করে বর্তমান সরকারেল আমলে রাজনৈতিক প্রভাবশীদের ছত্রছায়ায় সব কিছু ম্যানেজ করে আর্থিক ভাবে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এরপর একে একে সুকৌশলে তার অপকর্ম চালিয়ে গেছেন। বাধাহীন ভাবে তিনি অপরাধ করেছেন। নিয়ন্ত্রণ করার প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা নিয়ে যার কারনে প্রশ্ন উঠেছে।

একজন ফরেনসিক মেডিসিন বিশেষজ্ঞ বলেন,টাকা কামানোর এটা একটা নেশা। যার ১০ টাকা আছে। সে ১ লাখ টাকা কামাইতে চায়। এরপর এক কোটি। এরপর ১শ কোটি টাকার মালিক হয়। নানা কৌশলে শত শত কোটি টাকার মালিক হওয়ার লোভ থেকে অনিয়মে জড়িড়ে পড়ে। তার ব্রেন থেকে শুরু করে সব কিছুই নেশার মত কাজ করেছে।

এনবিআরের সাবেক কর্মকর্তাদের সূত্র জানায়,এনবিআর কর্মকর্তা মতিউর রহমানকে নানা অভিযোগে চট্রগ্রাম থেকে বদলী করার পরও প্রভাবশালীদেরকে দিয়ে তদবির করত। তার তদবিরে এনবিআর অতিষ্ঠ ছিল। তিনি উল্টো প্রভাব খাটাতেন। নানা পর্যায়ে ছিল তার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ।

একজন অপরাধ বিশেষজ্ঞ জানান,এনবিআর কর্মকর্তা মতিউরের বিষয় হলো আইনী অপরাধ। এখনো আইনী প্রক্রিয়ায় তার অপরাধ প্রমাণিত হয়নি। তবে তার অপরাধ প্রাতিষ্ঠানিক বেশী। সেখানে তিনি দূর্নীতি করে লাভবান হয়েছে। সেখানে তার ব্যবস্থাপনায় দূর্বলতার কারনে বেপরোয়া হয়ে অনিয়ম করেছে। শুরুতে এনবিআরে তার অনিয়ম কঠোর ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হলে রাষ্ট্র উপকৃত হত। প্রতিষ্ঠানের সুনাম বাড়ত। তা করতে না পারায় কর্মকর্তা মতিউর অনিয়ম করে সম্পদের মালিক হয়েছেন। সেখান থেকে ছাগল কান্ড ঘটেছে। এই ধরনের আরও অনেকেই আছে। দূদকের তদন্তে তা প্রমাণিক হবে এটাই প্রত্যাশা।

দূদক কর্মকর্তারা বলেছেন, মতিউর রহমানের ‘অবৈধ সম্পদের’ বিষয়ে অনুসন্ধানের জন্য গঠিত অনুসন্ধান দলের প্রধান দুদকের উপপরিচালক মো. আনোয়ার হোসেন আদালতে ওই আবেদন করেন। সেখানে বলা হয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তা মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে ‘দুর্নীতির মাধ্যমে দেশে ও বিদেশে অবৈধ সম্পদ অর্জনসহ হুন্ডি ও আন্ডারইনভয়েসিং/ওভারইনভয়েসিং-এর মাধ্যমে বিদেশে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচারের অভিযোগ’ অনুসন্ধানের জন্য দুদকের এই তিন সদস্যের অনুসন্ধান টিম গঠন করা হয়েছে।

জানা গেছে, মো. মতিউর রহমান ও তার পরিবারের অন্য সদস্যরা দেশত্যাগ করার চেষ্টা করছেন। তাই সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তার এবং তার পরিবারের সদস্যদের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা আবশ্যক। কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট মতিউর রহমানকে ইতোমধ্যে এনবিআর থেকে সরিয়ে রোববারই অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে সংযুক্ত করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

জানা গেছে, মতিউর রহমান এর আগে ব্রাসেলসে বাংলাদেশের কমার্শিয়াল কাউন্সিলের, চট্টগ্রাম কাস্টমসের কমিশনার, ভ্যাট কমিশনারসহ বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেছেন। ছাগল নিয়ে আলোচনার সূত্রপাত হলেও তার বিপুল সম্পদের তথ্য এখন গণমাধ্যমে শিরোনাম হচ্ছে।

প্রাপ্ত তথ্য মতে, মতিউর রহমানের গ্রামের বাড়ি বরিশালের মূলাদি। তিনি ১৯৯৪ সালে সরকারি চাকরিতে যোগ দেওয়া এ কর্মকর্তা পড়ালেখা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগে। এর আগেও তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, সেসব দুদক তদন্তও করেছে। সম্প্রতি বেসরকারি এক টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন,‘চারবার দুদক তদন্ত করে দেখেছে, আমি কোনো দুর্নীতি করিনি।’ বিপুল আয়ের উৎস সম্পর্কে প্রশ্ন করলে মতিউর ওই সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘একটা গ্রুপ অব কোম্পানির ৩০০ একরের জমিতে আমার একটা অংশ আছে। কোনো কারখানায় আমার বিনিয়োগ আছে। কিন্তু ৩০০ একর জমি বা কারখানার পুরোটা আমার না। আমাদের পরিবারের বিনিয়োগ আছে মাত্র।’

দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমিন গতকাল দুপুরে দুদক কার্যালয়ে সাংবাদিকদেরকে বলেন, মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের যে অভিযোগ উঠেছে, সে বিষয়ে দুদকের তদন্ত টিমের কাজ শুরু করেছেন। অগ্রগতি প্রসঙ্গে বলেন, মো. মতিউর রহমান, তার স্ত্রী লায়লা কানিজ ও ছেলে আহমদ তৌফিকুর রহমান যেন দেশের বাইরে যেতে না পারেন, সে জন্য দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তাদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। দুদক সচিব আরও বলেন, দুদক স্বাধীন প্রতিষ্ঠান, কোনো দিক থেকে চাপ আসছে না।

অভিযোগ রয়েছে,এনবিআরের ভ্যাট ও কাস্টমসসহ অন্যান্য শাখার কর্মকর্তাদের সম্পদ নিয়ে অনুসন্ধান ্ তদন্ত করলে আরও অনিয়ম দূনীতি বেরিয়ে আসবে। আর এনবিআরে সৎ ও নিষ্ঠভান কর্মকর্তারা খুশি হবে। সরকারের রাজস্ব বাড়বে বলে অনেকেই মন্তব্য করেন। তাদের গাড়ি ,বাড়ি ,ফ্ল্যাট ও তাদের স্ত্রী ও সন্তানের লেখাপড়া থেকে শুরু করে বিদেশ ভ্রমণ সব কিছুতে রাষ্ট্রীয় তদারকি থাকলে কমবে দূর্নীতি। বাড়বে রাজস্ব। আর উন্নত হবে দেশ।

 

Tag :
About Author Information

Md Rasel Mia

জনপ্রিয় নিউজ

শেখ হাসিনার পদত্যাগ নিয়ে রাষ্ট্রপতির বক্তব্য মিথ্যাচার: আসিফ নজরুল

ছাগলকাণ্ডের মতিউর ও স্ত্রী-পুত্রের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

সময়ঃ ১১:১২:০৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ জুন ২০২৪

স্টাফ রিপোর্টার :১৫ লাখ টাকার ছাগলকাণ্ডে আলোচিত রাজস্ব বোর্ডের প্রভাবশালী কর্মকর্তা মতিউর রহমান, তার স্ত্রী লায়লা কানিজ এবং ছেলে আহম্মেদ তৌফিকুর রহমান অর্ণবের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।

বেনজীর-আজিজ আওয়ামী লীগের কেউ না: ওবায়দুল কাদের 

দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকের আবেদনের শুনানি করে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন আজ সোমবার এই নিষেধাজ্ঞা জারির আদেশ দেন।

অপর দিকে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন,আদালতের বিষয়টি জেনেছি। তবে গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত আদেশের কপি ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ হাতে পায়নি। এরপর তারা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছেন। আর দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া ছেলে ও পরিবার নিয়ে ধূম্রজাল ছড়িয়েছে। তার দুইজন স্ত্রী ও সন্তানের কথা শুনেছি। কোন সংসারের স্ত্রী ও সন্তান পালিয়েছে তার তথ্য নিশ্চিতে অনুসন্ধান তদন্ত চলছে।

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, ছাগলকাণ্ডের পর ছেলেকে অস্বীকার করে এনবিআর কর্মকর্তা মতিউর বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ে গা ঢাকা দিয়েছিলেন। সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হয়ে নিজেকে আড়াল করে রেখেছিলেন তিনি। মোবাইল ফোনে যোগাযোগও ছিল সীমিত। সেই সময়ে অস্বীকার করা ছেলেকে নিরাপদে মালয়েশিয়ায় পাঠিয়ে দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে একটি সূত্র।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিন্যান্স বিভাগে পড়াশোনা করা মতিউর রহমান অনেক কোম্পানির ছায়া পরিচালক। একাধিক ছোট কোম্পানি শেয়ারবাজারে আনার মাধ্যমে বাজার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে তিনি ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন। শেয়ারবাজার কারসাজিতে জড়িতদের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে বলে অনুসন্ধানে জানা গেছে।

আইন শৃংখলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের মতে,এনবিআর কর্মকর্তা মতিউর ছিল ম্যানেজ মাস্টার। বিএনপি ও জামাত জোট সরকার আমল থেকে শুরু করে বর্তমান সরকারেল আমলে রাজনৈতিক প্রভাবশীদের ছত্রছায়ায় সব কিছু ম্যানেজ করে আর্থিক ভাবে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এরপর একে একে সুকৌশলে তার অপকর্ম চালিয়ে গেছেন। বাধাহীন ভাবে তিনি অপরাধ করেছেন। নিয়ন্ত্রণ করার প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা নিয়ে যার কারনে প্রশ্ন উঠেছে।

একজন ফরেনসিক মেডিসিন বিশেষজ্ঞ বলেন,টাকা কামানোর এটা একটা নেশা। যার ১০ টাকা আছে। সে ১ লাখ টাকা কামাইতে চায়। এরপর এক কোটি। এরপর ১শ কোটি টাকার মালিক হয়। নানা কৌশলে শত শত কোটি টাকার মালিক হওয়ার লোভ থেকে অনিয়মে জড়িড়ে পড়ে। তার ব্রেন থেকে শুরু করে সব কিছুই নেশার মত কাজ করেছে।

এনবিআরের সাবেক কর্মকর্তাদের সূত্র জানায়,এনবিআর কর্মকর্তা মতিউর রহমানকে নানা অভিযোগে চট্রগ্রাম থেকে বদলী করার পরও প্রভাবশালীদেরকে দিয়ে তদবির করত। তার তদবিরে এনবিআর অতিষ্ঠ ছিল। তিনি উল্টো প্রভাব খাটাতেন। নানা পর্যায়ে ছিল তার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ।

একজন অপরাধ বিশেষজ্ঞ জানান,এনবিআর কর্মকর্তা মতিউরের বিষয় হলো আইনী অপরাধ। এখনো আইনী প্রক্রিয়ায় তার অপরাধ প্রমাণিত হয়নি। তবে তার অপরাধ প্রাতিষ্ঠানিক বেশী। সেখানে তিনি দূর্নীতি করে লাভবান হয়েছে। সেখানে তার ব্যবস্থাপনায় দূর্বলতার কারনে বেপরোয়া হয়ে অনিয়ম করেছে। শুরুতে এনবিআরে তার অনিয়ম কঠোর ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হলে রাষ্ট্র উপকৃত হত। প্রতিষ্ঠানের সুনাম বাড়ত। তা করতে না পারায় কর্মকর্তা মতিউর অনিয়ম করে সম্পদের মালিক হয়েছেন। সেখান থেকে ছাগল কান্ড ঘটেছে। এই ধরনের আরও অনেকেই আছে। দূদকের তদন্তে তা প্রমাণিক হবে এটাই প্রত্যাশা।

দূদক কর্মকর্তারা বলেছেন, মতিউর রহমানের ‘অবৈধ সম্পদের’ বিষয়ে অনুসন্ধানের জন্য গঠিত অনুসন্ধান দলের প্রধান দুদকের উপপরিচালক মো. আনোয়ার হোসেন আদালতে ওই আবেদন করেন। সেখানে বলা হয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তা মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে ‘দুর্নীতির মাধ্যমে দেশে ও বিদেশে অবৈধ সম্পদ অর্জনসহ হুন্ডি ও আন্ডারইনভয়েসিং/ওভারইনভয়েসিং-এর মাধ্যমে বিদেশে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচারের অভিযোগ’ অনুসন্ধানের জন্য দুদকের এই তিন সদস্যের অনুসন্ধান টিম গঠন করা হয়েছে।

জানা গেছে, মো. মতিউর রহমান ও তার পরিবারের অন্য সদস্যরা দেশত্যাগ করার চেষ্টা করছেন। তাই সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তার এবং তার পরিবারের সদস্যদের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা আবশ্যক। কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট মতিউর রহমানকে ইতোমধ্যে এনবিআর থেকে সরিয়ে রোববারই অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে সংযুক্ত করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

জানা গেছে, মতিউর রহমান এর আগে ব্রাসেলসে বাংলাদেশের কমার্শিয়াল কাউন্সিলের, চট্টগ্রাম কাস্টমসের কমিশনার, ভ্যাট কমিশনারসহ বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেছেন। ছাগল নিয়ে আলোচনার সূত্রপাত হলেও তার বিপুল সম্পদের তথ্য এখন গণমাধ্যমে শিরোনাম হচ্ছে।

প্রাপ্ত তথ্য মতে, মতিউর রহমানের গ্রামের বাড়ি বরিশালের মূলাদি। তিনি ১৯৯৪ সালে সরকারি চাকরিতে যোগ দেওয়া এ কর্মকর্তা পড়ালেখা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগে। এর আগেও তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, সেসব দুদক তদন্তও করেছে। সম্প্রতি বেসরকারি এক টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন,‘চারবার দুদক তদন্ত করে দেখেছে, আমি কোনো দুর্নীতি করিনি।’ বিপুল আয়ের উৎস সম্পর্কে প্রশ্ন করলে মতিউর ওই সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘একটা গ্রুপ অব কোম্পানির ৩০০ একরের জমিতে আমার একটা অংশ আছে। কোনো কারখানায় আমার বিনিয়োগ আছে। কিন্তু ৩০০ একর জমি বা কারখানার পুরোটা আমার না। আমাদের পরিবারের বিনিয়োগ আছে মাত্র।’

দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমিন গতকাল দুপুরে দুদক কার্যালয়ে সাংবাদিকদেরকে বলেন, মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের যে অভিযোগ উঠেছে, সে বিষয়ে দুদকের তদন্ত টিমের কাজ শুরু করেছেন। অগ্রগতি প্রসঙ্গে বলেন, মো. মতিউর রহমান, তার স্ত্রী লায়লা কানিজ ও ছেলে আহমদ তৌফিকুর রহমান যেন দেশের বাইরে যেতে না পারেন, সে জন্য দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তাদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। দুদক সচিব আরও বলেন, দুদক স্বাধীন প্রতিষ্ঠান, কোনো দিক থেকে চাপ আসছে না।

অভিযোগ রয়েছে,এনবিআরের ভ্যাট ও কাস্টমসসহ অন্যান্য শাখার কর্মকর্তাদের সম্পদ নিয়ে অনুসন্ধান ্ তদন্ত করলে আরও অনিয়ম দূনীতি বেরিয়ে আসবে। আর এনবিআরে সৎ ও নিষ্ঠভান কর্মকর্তারা খুশি হবে। সরকারের রাজস্ব বাড়বে বলে অনেকেই মন্তব্য করেন। তাদের গাড়ি ,বাড়ি ,ফ্ল্যাট ও তাদের স্ত্রী ও সন্তানের লেখাপড়া থেকে শুরু করে বিদেশ ভ্রমণ সব কিছুতে রাষ্ট্রীয় তদারকি থাকলে কমবে দূর্নীতি। বাড়বে রাজস্ব। আর উন্নত হবে দেশ।