মঙ্গলবার সকাল থেকে পশ্চিমবঙ্গের সরকারি মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তাররা আবারও পূর্ণ কর্মবিরতি শুরু করেছেন। কলকাতার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কর্তব্যরত এক ডাক্তার-পড়ুয়ার ধর্ষণ ও খুনের দ্রুত ন্যায়বিচার সহ ১০ দফা দাবিতে কর্মবিরতি শুরু করেছেন চিকিৎসকরা। এই দাবিগুলির মধ্যে হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসকদের নিরাপত্তার মতো বিষয়গুলি যেমন আছে, তেমনই রয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিবের অপসারণের দাবিও।
ওই ডাক্তার-পড়ুয়ার ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার পর থেকেই কর্মবিরতি শুরু করেছিলেন রাজ্যের জুনিয়র ডাক্তাররা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর সঙ্গে এক বৈঠকের পরে গত ২১শে সেপ্টেম্বর থেকে আংশিক কর্মবিরতি তুলে নেওয়া হয়।
সরকার দাবি করছিল যে চিকিৎসকদের নিরাপত্তাসহ যেসব দাবিতে আগেরবার কর্মবিরতি পালন করা হচ্ছিল, তার মধ্যে অনেকগুলি ক্ষেত্রেই ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়েছে।
তারই মধ্যে গত শুক্রবার কলকাতা লাগোয়া এলাকায় সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আবারও কর্তব্যরত ডাক্তারদের ওপরে এক রোগীর পরিবার হামলা করেন বলে অভিযোগ। তারপরে কলকাতার ন্যাশানাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেও এক রোগীর পরিবারের হাতে ডাক্তারদের হেনস্থা হতে হয় বলে অভিযোগ ওঠে।
এই প্রেক্ষিতে রাজ্যের ২৩টি মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তাররা সোমবার গভীর রাত পর্যন্ত বৈঠক করে মঙ্গলবার সকাল থেকে পূর্ণ কর্মবিরতিতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
সোমবার সুপ্রিম কোর্টে ডাক্তার-পড়ুয়ার ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার শুনানিতে শীর্ষ আদালত মন্তব্য করেছিল যে কেন জুনিয়র চিকিৎসকরা আংশিক কর্মবিরতি তুলেছেন, তাদের সব পরিষেবায় যোগ দেওয়া উচিত।
এদিকে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের ওই তরুণী ডাক্তার-পড়ুয়ার ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার বিচার চেয়ে নতুন উদ্যমে মঙ্গলবার কলকাতা সহ রাজ্যের নানা জায়গায় প্রতিবাদ মিছিল, জমায়েত হওয়ার কথা। চিকিৎসক, ফুটবল ফ্যান, প্রতিবন্ধী, স্কুলগুলির বর্তমান ও প্রাক্তণ ছাত্রছাত্রীরা সহ অনেকগুলি সংগঠন সম্মিলিত ভাবে এইসব প্রতিবাদ-জমায়েতের ডাক দিয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর থেকে বুধবার ভোর পর্যন্ত এই জমায়েতগুলি চলার কথা। এর আগেও ওই তরুণী ডাক্তার-পড়ুয়ার ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার বিচার চেয়ে একাধিকবার ‘রাত দখল’ কর্মসূচিতে লক্ষ লক্ষ সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমেছিলেন কোনও দলীয় পতাকা ছাড়াই।