০৯:১১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আজ ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ

বঙ্গবন্ধুর কণ্ঠে বাঙালির মুক্তির মহাকাব্য

  • Md Rasel Mia
  • সময়ঃ ১২:৪১:২৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ মার্চ ২০২৪
  • ৯০ সময়

ডেস্ক রিপোর্ট : আজ ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ। আজ থেকে ৫৩ বছর আগে ১৯৭১ সালের আজকের  এই দিনে রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) এক ঐতিহাসিক  ভাষণে বাঙালি জাতিকে মুক্তির স্বপ্নে বিভোর করেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তারপর সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ, ৯ মাসের লড়াই এবং স্বাধীনতা অর্জিত হয়।

রাজনীতি বিশেষজ্ঞদের মতে, পশ্চিম পাকিস্তানিদের সঙ্গে আর থাকা যাবে না—এ ধারণা বাঙালির মনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ৭ই মার্চের আগে। ফলে স্বাধীনতাতেই সমাধান দেখছিল আপামর জনতা। প্রশ্ন ছিল, কীভাবে সেই স্বাধীনতা অর্জিত হবে? ৭ই মার্চ বিশাল জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু প্রথম বারের স্বাধীনতা-সংগ্রামের রূপরেখা দেন। এ ভাষণে জাতিকে মুক্তিসংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বানের পাশাপাশি ছিল দিকনির্দেশনাও। সেদিন লাখ লাখ মুক্তিকামী মানুষের উপস্থিতিতে বঙ্গবন্ধু বজ্রকন্ঠে ঘোষণা দেন, ‘সাত কোটি মানুষকে আর দাবায়ে রাখতে পারবা না। বাঙ্গালী মরতে শিখেছে, তাদের কেউ দাবাতে পারবে না। রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরও দেব। এই দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশাআল্লাহ। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম।’

বঙ্গবন্ধুর এই তেজদৃপ্ত ঘোষণাই ছিল প্রকৃতপক্ষে আমাদের স্বাধীনতার ভিত্তি। বিশ্বে সর্বাধিক বার প্রচারিত ও শ্রবণকৃত ভাষণ। বাঙালি জাতির স্বাধীনতা-সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা অবিস্মরণীয় গৌরবের এক অনন্য দিন আজ। বঙ্গবন্ধুর সেই ভাষণ বাঙালি জাতির কাছে সব সময়ই বিশেষ কিছু। ২০১৭ সালে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা ইউনেস্কো বিশ্ব ইতিহাসের প্রামাণ্য দলিল হিসেবে গ্রহণ করে ভাষণটিকে। সংস্থাটি বিশ্বের ৭৮টি ঐতিহাসিক ও গুরুত্বপূর্ণ দলিল, নথি ও বক্তৃতার মধ্যে বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণও অন্তর্ভুক্ত করে। দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

সেদিন সকাল থেকেই চারদিকে মানুষের ঢল নামে রেসকোর্স ময়দানে। লক্ষ মানুষের পদভারে ঢাকা পরিণত হয় উদ্বেলিত নগরে। বঙ্গবন্ধু জনসভায় আসতে একটু বিলম্ব করেন। স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়া হবে কী, হবে না এ নিয়ে তখনো রুদ্ধদ্বার বৈঠক চলছে নেতৃবৃন্দের মধ্যে। বেলা ঠিক সোয়া ৩টায় সাদা পায়জামা-পাঞ্জাবি ও মুজিব কোট পরিহিত বঙ্গবন্ধু যখন মঞ্চে ওঠেন, তখন বাংলার বীর জনতা বজ্রনির্ঘোষে করতালি ও স্লোগানের মধ্যে তাকে অভিনন্দন জানান।‘পদ্মা মেঘনা যমুনা তোমার আমার ঠিকানা’, ‘তোমার দেশ আমার দেশ, বাংলাদেশ বাংলাদেশ’—স্লোগানে মুখরিত হয় রেসকোর্স ময়দান। মঞ্চ থেকে বঙ্গবন্ধু যখন জনতার উদ্দেশ্যে হাত নাড়েন, তখন পুরো সোহরাওয়ার্দী উদ্যান লাখ লাখ বাঙালির ‘তোমার দেশ আমার দেশ, বাংলাদেশ বাংলাদেশ, তোমার নেতা আমার নেতা শেখ মুজিব, শেখ মুজিব’—স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে। এরপর বঙ্গবন্ধু ২২ মিনিট তার জীবনের শ্রেষ্ঠতম এবং ঐতিহাসিক ভাষণ দেন।

One thought on “বঙ্গবন্ধুর কণ্ঠে বাঙালির মুক্তির মহাকাব্য

  1. বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান

Comments are closed.

About Author Information

Md Rasel Mia

জনপ্রিয় নিউজ

জানুয়ারি থেকে স্কুল-কলেজের সব শিক্ষকের এমপিও ইএফটিতে

আজ ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ

বঙ্গবন্ধুর কণ্ঠে বাঙালির মুক্তির মহাকাব্য

সময়ঃ ১২:৪১:২৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ মার্চ ২০২৪

ডেস্ক রিপোর্ট : আজ ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ। আজ থেকে ৫৩ বছর আগে ১৯৭১ সালের আজকের  এই দিনে রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) এক ঐতিহাসিক  ভাষণে বাঙালি জাতিকে মুক্তির স্বপ্নে বিভোর করেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তারপর সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ, ৯ মাসের লড়াই এবং স্বাধীনতা অর্জিত হয়।

রাজনীতি বিশেষজ্ঞদের মতে, পশ্চিম পাকিস্তানিদের সঙ্গে আর থাকা যাবে না—এ ধারণা বাঙালির মনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ৭ই মার্চের আগে। ফলে স্বাধীনতাতেই সমাধান দেখছিল আপামর জনতা। প্রশ্ন ছিল, কীভাবে সেই স্বাধীনতা অর্জিত হবে? ৭ই মার্চ বিশাল জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু প্রথম বারের স্বাধীনতা-সংগ্রামের রূপরেখা দেন। এ ভাষণে জাতিকে মুক্তিসংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বানের পাশাপাশি ছিল দিকনির্দেশনাও। সেদিন লাখ লাখ মুক্তিকামী মানুষের উপস্থিতিতে বঙ্গবন্ধু বজ্রকন্ঠে ঘোষণা দেন, ‘সাত কোটি মানুষকে আর দাবায়ে রাখতে পারবা না। বাঙ্গালী মরতে শিখেছে, তাদের কেউ দাবাতে পারবে না। রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরও দেব। এই দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশাআল্লাহ। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম।’

বঙ্গবন্ধুর এই তেজদৃপ্ত ঘোষণাই ছিল প্রকৃতপক্ষে আমাদের স্বাধীনতার ভিত্তি। বিশ্বে সর্বাধিক বার প্রচারিত ও শ্রবণকৃত ভাষণ। বাঙালি জাতির স্বাধীনতা-সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা অবিস্মরণীয় গৌরবের এক অনন্য দিন আজ। বঙ্গবন্ধুর সেই ভাষণ বাঙালি জাতির কাছে সব সময়ই বিশেষ কিছু। ২০১৭ সালে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা ইউনেস্কো বিশ্ব ইতিহাসের প্রামাণ্য দলিল হিসেবে গ্রহণ করে ভাষণটিকে। সংস্থাটি বিশ্বের ৭৮টি ঐতিহাসিক ও গুরুত্বপূর্ণ দলিল, নথি ও বক্তৃতার মধ্যে বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণও অন্তর্ভুক্ত করে। দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

সেদিন সকাল থেকেই চারদিকে মানুষের ঢল নামে রেসকোর্স ময়দানে। লক্ষ মানুষের পদভারে ঢাকা পরিণত হয় উদ্বেলিত নগরে। বঙ্গবন্ধু জনসভায় আসতে একটু বিলম্ব করেন। স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়া হবে কী, হবে না এ নিয়ে তখনো রুদ্ধদ্বার বৈঠক চলছে নেতৃবৃন্দের মধ্যে। বেলা ঠিক সোয়া ৩টায় সাদা পায়জামা-পাঞ্জাবি ও মুজিব কোট পরিহিত বঙ্গবন্ধু যখন মঞ্চে ওঠেন, তখন বাংলার বীর জনতা বজ্রনির্ঘোষে করতালি ও স্লোগানের মধ্যে তাকে অভিনন্দন জানান।‘পদ্মা মেঘনা যমুনা তোমার আমার ঠিকানা’, ‘তোমার দেশ আমার দেশ, বাংলাদেশ বাংলাদেশ’—স্লোগানে মুখরিত হয় রেসকোর্স ময়দান। মঞ্চ থেকে বঙ্গবন্ধু যখন জনতার উদ্দেশ্যে হাত নাড়েন, তখন পুরো সোহরাওয়ার্দী উদ্যান লাখ লাখ বাঙালির ‘তোমার দেশ আমার দেশ, বাংলাদেশ বাংলাদেশ, তোমার নেতা আমার নেতা শেখ মুজিব, শেখ মুজিব’—স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে। এরপর বঙ্গবন্ধু ২২ মিনিট তার জীবনের শ্রেষ্ঠতম এবং ঐতিহাসিক ভাষণ দেন।